
আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে একটি বিশদ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। রবিবার (১৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি আলিয়া ধারার শিক্ষা, এর ইতিহাস ও বর্তমান কারিকুলাম সংস্কার নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাধারা ভারসাম্যপূর্ণ ও যুগোপযোগী, যা সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সক্ষম। তিনি বলেন, “আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা ধারাই হবে বাংলাদেশের মূল ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা ইনশাআল্লাহ। আমরা ঐ দিকেই হাঁটছি।”
তিনি জানান, আগের সময়ে সিলেবাস, কারিকুলাম ও মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনায় বৈষম্য সৃষ্টি করে যা ক্ষতি করা হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগলেও এই ধারার শিক্ষা আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।
ইতিহাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৮০১ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল মাদ্রাসা, মক্তব ও মসজিদ। তার দাবি, লর্ড মেকলের প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থা বস্তুবাদী ধ্যানধারণার ভিত্তিতে তৈরি—যেখানে কোরআন, হাদিস ও ইসলামী অনুশাসন শেখার সুযোগ নেই।
ড. হেদায়েত উল্লাহর মতে, সাধারণ শিক্ষাধারা “খণ্ডিত ও একদৃষ্টিভঙ্গিভিত্তিক”, যা শুধুমাত্র পার্থিব ক্যারিয়ারমুখী শিক্ষার দিকে পরিচালিত করে। তিনি বলেন, “এটি মুসলমানদের জন্য পরিপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা নয়।”
এর বিপরীতে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাকে তিনি ‘ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশন’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা দুনিয়া ও আখিরাত–দুই দিকের উন্নয়ন ভাবনায় ডিজাইন করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, যদি ইসলামাইজেশন অব নলেজ বাস্তবায়ন করা যায়, তবে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
শেষে তিনি মন্তব্য করেন, আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষায় মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে এ শিক্ষাব্যবস্থাই বাংলাদেশের জাতীয় ও মূলধারার শিক্ষা হয়ে উঠবে।
আপনার মতামত লিখুন :